ব্লগ

মোরাকাবা মোশাহেদা বা ধ্যান

বাবা দেলোয়ার হোসেন আল -সুরেশ্বরী

মোরাকাবা মোশাহেদা


মোরাকাবা অর্থ ধ্যান, মোশাহেদা অর্থ কোন সত্ত্বাকে পাওয়া। অর্থাৎ ধ্যানের মাধ্যমে কোন সত্ত্বাকে পাওয়া বা উপলব্ধি করার নাম মোরাকাবা মোশাহেদা। মোরাকাবা বলতে আকার আকৃতি বিশিষ্ট বস্তু, মোশাহেদা বলতে ঐ বস্তুর উপর সুক্ষ্ম দৃষ্টি। মোরাকাবা বস্তুর প্রতি গভীর ধ্যান বা মনোযোগ বুঝায়।

মোরকাবা:- দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। মোর শব্দটি মোর + আ (প্রত্যয়) যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে যার অর্থ দাঁড়ায় আমার। আর কাবা অর্থ মক্কার অবস্থিত আল্লাহ্র ঘর তোলা অস্থাবরণ, আধ্যাত্মিক ভাবে শেষ বা চূড়ান্ত লক্ষ্যস্থল বা গন্তব্য স্থল। দুনিয়া বাসীর চিন্তা হতে মুক্ত হয়ে স্রষ্টার দর্শনের আশায় একাগ্র চিত্তে নিমগ্ন বা ধ্যানস্ত হওয়ার নাম মোরাকাবা। আর ধ্যান করতে গেলে সুরত বা চেহারা প্রয়োজন, তাই পীরের চেহার বা সুরতে মশগুল থাকা মোরাকাবা। মোশাহেদা অর্থ দর্শন বা দেখা পীরের রূপ ব্যতীত কিছুই থাকে না (আমিত্ত্ব হাস্তির)। কিছুই না থাকলে তখন বিশেষ কিছু আলামত বা নিদর্শন দেখা যায় তা হলো মোশাহেদা। মোরাকাবা কাবায় মৃত্যু বরণ করা। এখন কথা হলো কাবা দুই প্রকার, জাহেরী কাবা মক্কায় অবস্থিত আর বাতেনি কাবা হলো গুরু বা মোর্শেদ। মওলা আলী (আঃ) বলেছেন, “আমি ঐ আল্লাহ্র এবাদত করি না, যাকে আমি দেখি না”। রাসুল (সাঃ) (আঃ) বলেছেন, “মওতা কাবলা আনতা মুতু” অর্থ তোমরা মৃত্যুর পূর্বে মরিয়া যাও। উক্ত বাণীর আলোকে আপন মোর্শেদের মধ্যে ফানা বা বিকশিত হওয়াই হলো মোরাকাবা আর এমন অবস্থায় সামনে দৃশ্যায়ন কিছু যা উপস্থাপিত হয় তাই দেখা হলো মোশাহেদা। অর্থাৎ ধ্যেয় বস্তুকে সামনে উপস্থাপন প্রক্রিয়া হলো মোশাহেদা।


কোরানুল মাজিদের সূরা আল-ইমরানের ৩১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্পাক বলেছেন:- “বলুন (হে মোহাম্মদ) যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালবাসিতে চাও, সুতরাং আমার আনুগত্য কর, আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালবাসিবেন এবং (তিঁনি) তোমাদের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করিবেন এবং আল্লাহ্ অত্যান্ত ক্ষমাশীল (এবং) পরম দয়ালু”। একই সঙ্গে সূরা আল-ইমরানের “১৯০” নাম্বার আয়াতে উল্লেখ:- “নিশ্চয় আকাশ সমূহ এবং পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে এবং রাত্রি এবং দিনের পরিবর্তন অবশ্যই উলীল আলবাবদের (বিচক্ষণ ব্যক্তিগণের) জন্য আয়াত (নিদর্শন) রহিয়াছে”। সূরা সাবা, ৪৬ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে:- “(হে নবী) তুমি বলো, আমি তোমাদের শুধু একটি কথাই উপদেশ দিচ্ছি তা হলো তোমরা আল্লাহ্তাআলার জন্যই (সত্যের উপর) দাঁড়িয়ে যাও। দু-দুজন করে (দু-জন না হলে) একা একা, অতঃপর ভাল করে চিন্তা কর”।


তাহলে সূরা আল-ইমরানের ৩১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্পাক উল্লেখ করলেন, আল্লাহ্কে ভালবাসতে চাইলে মোহাম্মদ (সাঃ) (আঃ) এর আনুগত্য করতে হবে, তবেই সেই আনুগত্য’র মূল্যায়ন হিসাবে আল্লাহ্ তাকে ভালবাসবে। তাহলে রাসুল (সাঃ) (আঃ) ১৫ বছর হেরা পর্বতের গুহায় মোরাকাবা-মোশাহেদায় লিপ্ত ছিলেন বাংলায় ইহাকে ধ্যান বলে। এটাই উম্মতের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেলেন, তাঁর এমন আমল দরকার ছিল না। কারণ হাদিস শরীফে আসছে, “আদম যখন কাদা ও পানিতে মোশানো তখনও আমি নবী”। আলোচ্য আয়াতে গুনাহ সমূহ ক্ষমা করিবেন তিঁনি অত্যান্ত পরম দয়ালু। একই সঙ্গে উক্ত সূরার ১৯০ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্পাক উল্লেখ রাখলেন :- “নিশ্চয় আকাশ সমূহ এবং পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে এবং রাত্রি এবং দিনের পরিবর্তন অবশ্যই উলীল আলবাবদের (বিচক্ষণ ব্যক্তিগণের) জন্য আয়াত (নিদর্শন) রহিয়াছে”। তাহলে উলিল আলবাব বা বিচক্ষণ ব্যক্তির যোগ্যতায় সমাসীন হওয়ার যে প্রক্রিয়া তা হলো এই মোরাকাবা-মোশাহেদার মাধ্যমের মানুষ বিচক্ষণ ব্যক্তিতে পরিনত হয়। সূরা সাবার ৪৬ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে একটি উপদেশ তা হলো সত্যের উপর দন্ডায়মান হবার নির্দেশ দিচ্ছে কোরান, সেটা আবার দু-দুজন করে তা না হলে একা একা এবং সঙ্গে চিন্তা করার কথা বলা হয়েছে।


তাই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হবার খেতাব জগতের সর্বশ্রেষ্ট নবী সরকারে দো আলম ইমামে কেবলা তাঈনে সরদারে হাসমি রহ্মাতুল্লিল আলামিন সাইয়্যেদুল কাউনাইন শফিউল মুজনাবিন ইমামুল মুরসালিন হাবিবুল্লাহ্ হুজুর আবুল কাশেম মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সর্ব প্রথম অর্জন করলেন “আল-আমিন” খেতাব সবার কাছে গ্রহনীয় ইহাই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ধারা। অতঃপর ভাল করে চিন্তা কর, এই চিন্তা হলো থিসিস বা গবেষণার একাগ্রতা লাভে সচেষ্ট হবার বা নিমগ্ন হওয়ার চিন্তারই উল্লেখ। মুর্শিদ রূপের ধ্যানে পূর্ণতা পেলে আধ্যাত্মিক ভাবে রাসুলের সংযোগ হয়। তখন সাধক রাসুলের সুরত ধরিয়া ফানাফির রাসুল হাসিল করেন। যা কলেমার বিভাজনে উল্লেখ রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ:- মোরাকাবা দ্বারা আশেক যখন খুব উপরে (উচু স্তরে) আরোহণ করে তখন পীরের সুরত ইলমে লাদুনী অর্থাৎ অদৃশ্য জগতের খবর পেতে থাকেন, এমন পর্যায়ে পীরের মাধ্যম ব্যতীত কিছুই গ্রহনীয় নয়। আফতাবে এলাহী আবুল হোসেন খেরকানী (রহঃ) বলেন, “এবাদত যখন তোমার (মাশুকের) উদয় হয় তখন আমি থাকি না আর আমার উদয় হলে তুমি থাক না”। তিনি আরও বলেন, “এবাদতে হয় তুমি থাক, না হয় আমি থাকি দুই যেন না হয়”।


রাসুল (সাঃ) (আঃ) বলেন:- যদি আয়নায় মানুষের চেহারা দেখা না গিয়ে চরিত্র দেখা যেত তাহলে মানুষ তার চেহার সুন্দর না করে চরিত্র সুন্দর করার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকত। কোরানুল মাজিদের সূরা ইউনুসের ৪৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্পাক বলেন:-“যাহারা আল্লাহ্র সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং তারা হেদায়েত প্রাপ্ত ছিল না”। আল্লাহ্কে দর্শন করতে তিঁনি স্বয়ং নির্দেশ দিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী কর্ম বা সাধনা করতে বলেছেন সূরা ইনশিয়াকের ৬ নাম্বার আয়াতে :- “হে মানুষ তুমি তোমার প্রভুর নিকট পৌঁছানো পর্যন্ত মেহনত কর, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবে। রাসুল (সাঃ) (আঃ) বলেন:- “আল্লাহ্র ধ্যান তথা মোরাকাবা-মোশাহেদায় নিমগ্ন একটি মুহূর্ত ৭০ বছর এবাদত বন্দেগী থেকে উত্তম” (সিররুল আসরার পৃঃ ১৭)। অপর একটি হাদিসে আসছে:- “আল্লাহ্র জাতের ধ্যানের একটি মুহূর্তের মর্যাদা হাজার বছর এবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ” (বোখারী-৬৯৭০, মুসলিম-২৬৭৫)।
হযরত হামীদুদ্দীন নাগরী (রহঃ) তার “নাহাক্কাতুল” গ্রন্থে লিখেছেন:- কেবলা ৪ (চার) প্রকার।
১) মক্কায় অবস্থিত সকল মুসলমান নামজ আদায় করে।
২) মমিনের নিজের কলব বা দিল যার দিকে তরিকত অবলম্বীদের লক্ষ্য।
৩) কেবলা মুর্শিদ যার দিকে মুরিদের সকল এরাদা থাকা উচিৎ।
৪) কেবলা ওয়াজহুল্লাহ্ যা সকল কেবলা বিলীনকার।
বাবা হযরত নিজামউদ্দীন আওলিয়ার ভক্ত প্রেমের কবি বাবা আমির খসরু গেয়েছেন:- “যখন প্রনয়নীর রূপ ব্যতীত অন্য কেবলা ছিল না, তখন প্রেম এসে অন্য সকল কেবলাকে বিলীন করে ফেলল। কথিত আছে, একবার নিজামউদ্দীন আওলিয়া দরবারে উপবিষ্ট তাঁর মাথার টুপি তেরছি ভাবে একদিকে হেলানো তা আমীর খসরুর চোখে বড় সুন্দর লাগল। তিঁনি বলে উঠলেন, সকল জাতির জন্য এক-একটি পৃথক পন্থী ধর্ম ও দিক (কেবলা) নির্দিষ্ট আছে। আমি আমার কেবলা তেরছি টুপির দিকে নির্ধারণ করলাম।


কথিত আছে যে, একবার কোন এক অপরাধে শেখ আজল তাবরেজীকে কতল করার জন্য জল্লাদের হাতে অর্পণ করা হয়। জল্লাদ তাকে কতলের স্থানে নিয়ে কেবলা মুখী করিয়া দাঁড় করায়। তখন শেখ আজল তাবরেজী দেখল তাঁর পীরের মাজার তাঁর পিছনে পড়ে। তিঁনি কেবলার দিক হতে ঘুরে মুর্শিদের মাজারের দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন। জল্লাদ তাঁকে বলল, তুমি এখন যে অবস্থায় পতিত তোমার কেবলার দিকে মুখ করা কর্তব্য। জবাবে তিঁনি বললেন, তোমার তা দিয়ে কি কাজ। তুমি তরবারি উত্তোলন কর এবং আমার ঘাড়ের উপর মারো, আমি আমার নিজ কেবলার দিকেই তাকিয়ে আছি। এ বিষয় নিয়ে জল্লাদের মধ্যে তাঁর তর্ক বেঁধে গেল। এ তর্ক থাকতে থাকতে শাহী ফরমান এলো, ফরমানে উল্লেখ দরবেশকে ক্ষমা করা হলো, তাঁকে মুক্তি করে দাও। ফাওয়ায়েদুস সালেকীন কেতাবে লিখিত আছে হযরত বখতিয়ার কাকী (রহঃ) যখন এই ঘটনা বিবৃতি করছিলেন। তখন তিনি অশ্রুপূর্ণ চোখে বললেন, সেই ফকিরের এই প্রকার নেক আকিদা তাঁকে কতল হতে মুক্ত করেছিল।


হযরত আদম (আঃ ) কে আল্লাহ্ তিনটি ইবাদত শিখিয়েছিলেন:- “জিকির, মোরাকাবা, মোশাহেদা। এই তিনটি ইবাদতই ছিল তাঁর নামাজ। হযরত আদম (আঃ) সালেহা, সালেহা, সালেহা বলে জিকির করতেন” (তথ্যসূত্র: ইটিভি ২ মে, ২০১৮ [২৩:১৯])। এছাড়া হযরত আদম (আঃ) গর্দান ঝুঁকিয়ে মোরাকাবায় বসে থাকতেন, ধ্যানে নিমগ্ন হতেন। তাছাড়া হযরত আদম (আঃ) তৃতীয় সাধনা ছিল মোশাহেবা। রাতের গভীরে একাকী নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে নিজের বিচার করাই হলো মোশাহেবা। তিরমিজি শরীফের একটি হাদিসে উল্লেখ হুজুর পাক (সাঃ) (আঃ) বলেন:- “বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে মৃত্যুর পূর্বে নিজের বিচার করে নেয়”। রাসুল (সাঃ) (আঃ) বলেন:- “তোমরা যখন আল্লাহ্র ইবাদত করবে তখন হয় ভাববে তুমি আল্লাহ্কে দেখতে পাচ্ছ, না হয় ভাববে আল্লাহ্ তোমাকে দেখছেন।


মোরাকাবা-মোশাহেদা বুঝবার জন্য উল্লেখিত সনদ গুলো তুলে ধরা হলো। এই আমল নীতির দ্বারা মানুষ স্রষ্টার সান্নিধ্যে পৌঁছায়। মহানবী (সাঃ) (আঃ) তাঁর হায়াতের জিন্দিগিতে ১৫ বছর (জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান সময়) হেরা পর্বতের গুহায় কাটালেন। তাঁরই উম্মত আমরা স্বীয় ধর্মের চলমান মানদন্ডে এই মোরাকাবা-মোশাহেদার (জাহিরি ভাবে) স্থান হলো না। প্রচলিত ব্যবস্থায় ধর্মে এই আমল নীতির কোন তাগিদ পরিলক্ষিত হয় না। তাহলে ধর্মের বিতর্কের অবসান গুলি কি দিয়ে নিঃষ্পত্তি হবে ? মূল ধারার বিধান কোন ধারাতে প্রতিষ্ঠিত হবে! তাই জ্ঞানীদেরকে চিন্তিত করে। এহেন অবস্থা উত্তরণের জন্য সুফিরা ব্যক্তি কেন্দ্রিক এই আমল নীতির সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে থাকে। তাই মানুষ মুক্তির ধারাতে ধর্মকে কাজে লাগিয়ে একটি পূর্ণতার অবগাহনে সিক্ত হতে হলে অবশ্যই তাকে মোরাকাবা-মোশাহেদায় লিপ্ত হতে হবে। আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্ কর্তৃক সকল প্রতিনিধিগণের আমল নীতি ছিল এই মোরাকাবা-মোশাহেদা।


বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচাইতে বেশী জরুরী হলো “গুরুবাদ” ব্যবস্থা প্রতিটি মানুষে কাছে পৌঁছানো, আপন মোর্শেদের ভিতর ফানা বা বিকশিত হবার ধারা থেকে আধ্যাত্মিক বিষয়ের বা আমল নীতির কার্যকারিতা মেলে। জ্ঞানীগণের উক্তি, “মোর্শেদ হলো রাসুল (সাঃ) (আঃ) দেখার আয়না, আর রাসুল (সাঃ) (আঃ) হলো আল্লাহ্ দেখার আয়না”। এজন্য মূল কথা দাঁড়ায় মোর্শিদ হলো সূচনা বা সিঁড়ি। মোর্শেদ ছাড়া এসকল বিষয় কিছুই সম্ভবপর নয়। ঐ ব্যক্তিই প্রকৃত আশেক যার ইহকাল ও পরকালের সকল আশা পরিত্যাগ করে মাশুকের দিকে নিবদ্ধ রয়েছে। আবার বলা হয়েছে, সত্যিকারের আশেক সেই ব্যক্তি যিনি মাশুকের দেওয়া সকল দুঃখ-কষ্ট ও মসিবতকে আনন্দের সাথে গ্রহন করেন এবং উহার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন না। কথা কম, খাওয়া কম, ঘুমানো কম মোরাকাবা-মোশাহেদায় লিপ্ত ব্যক্তিগণের অবশ্যই পালনীয় কাজ। এ প্রসঙ্গে কোরানুল মাজিদের সূরা আনফাল আয়াত নং ২৮ উল্লেখ, “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির অকাল্যাণের সম্মুখীন কারী, বস্তুত আল্লাহ্র নিকট রয়েছে মহা কল্যাণ”।


আলোচ্য মোরাকাবা-মোশাহেদা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক আলোচনার সার সংক্ষেপে দিয়ে শেষ করব। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার এল. জন বেয়ার্ড সংক্ষেপে লে. জি. বেয়ার্ড বলা হয়। তিনি টেলিভিশন আবিষ্কার করেন তার এই আবিষ্কারের কার্য-করণ তিনি উপস্থাপন করলেন। তিনি বললেন, প্রথম আমি একটি মানব দেহ নিয়ে গবেষণা শুরু করি যার নাম দিয়েছি ম্যান্টাল বডি (মানব দেহ)। দীর্ঘকাল গবেষণার পর এটা রূপান্তর হয়ে গেল, রূপান্তরিত যে দেহ সেটাকে নাম দেওয়া হলো অষ্ট্রাল বডি (জ¦তির দেহ)। এটা নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হলো আমার মধ্যে, তাই আমি এটা নিয়ে আরো গভীর ভাবে গবেষণায় লিপ্ত হই। পরবর্তীতে এটা আবার রূপান্তর হলো, যার নাম দিলাম অকেশনাল বডি (নিমিত্ব দেহ)। এই নিমিত্ব দেহ হতেই আমার এই আবিষ্কার (সংক্ষিপ্ত)।

এখানে বুঝবার বিষয় হলো, সাধক যখন আপন মোর্শেদের ধ্যান বা মোরাকাবা-মোশাহেদায় লিপ্ত থাকেন তখন পরিবর্তিত রূপ হতে হতে পর্যায় ক্রমে তা মূলের ধারাকে উদ্ভাসন এবং মিলন প্রক্রিয়াতে পৌঁছে দেয়। এজন্য আধ্যাত্মিক প্রদীপ্ত আকারে তা সাধকের মাঝে প্রাপ্তি সুনিশ্চিত ঘটায়। এই প্রদীপ্ত অবস্থাটাই হলো মোরাকাবা-মোশাহেদার পরিপূর্ণতার প্রাপ্তি। সাধনা বা মোরাকাবা-মোশাহেদা সম্পর্কে আরে ভাল করে বুঝতে আমার মোর্শেদ কেবলা-কাবা ডা. বাবা জাহাঙ্গীর বা ঈমান আল-সুরেশ^রীর “সুফিবাদ আত্ম পরিচয়ের একমাত্র পথ (১ম খন্ড)” কিতাবখানা পড়তে পাঠক বাবা-মায়েদেরকে অনুরোধ রাখি। মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে ফরিয়াদ’ সবাইকে যেন মূল ধারার বিষয় সম্পর্কে অবগত করবার তৌফিক দান করেন। আমিন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button