বই সমুহ

নতুন বছরের শুরুতেই পাঠক বাবা-মায়েদের জন্য প্রকাশিত হলো (“আধ্যাত্মিক হৃদয়”) নতুন একটি পুস্তক

জীলানী. জান শরীফ বাবা দেলোয়ার হোসেন আল- সুরেশ্বরী

জীবন মূল লক্ষে পৌঁছানোর জন্য। নিজের মূল লক্ষ্য ঠিক করো, তারপর তার দিকে এগিয়ে যাও। ইংরেজী নতুন বছর উজ্জ্বল হয়ে উঠুক নতুন আলোয় ও নতুন আশায় | সকল বাবা-মায়েদের নতুন বছরের প্রীতি ও শুভেচ্ছা ।

নতুন বছরের শুরুতে সকল মানব-মানবীর জন্য “আধ্যাত্মিক হৃদয়” পুস্তকটি মেলে ধরা হইল। পুস্তকটি বিনামূল্যে পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড ও পড়বার জন্য উপস্থাপিত হল।

বিস্মিল্লাহির রহমানির রহিম পূর্বাপর

আধ্যাত্মিক আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো মূলকে লাভ করার বিষয়ে নিয়ম-নীতির সঠিক ধারণা বা বিধি-বিধান, যে নিয়ম-নীতিগুলো পূর্বেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ইহা একই ধারাতে চলমান একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু কালের বিবর্তনের ধারাতে ইহা বারবার পরিবর্ধন ও পরিমার্জন হয়ে মানুষের কাছে গ্রহণীয় হয়ে উঠেছে বস্তুত মূল লাভের অন্তরায় হিসাবে। এরই প্রেক্ষাপটে মূলকে অর্জনকারীগণ প্রকৃত বিষয় সম্পর্কে লিখনির মাধ্যমে কিছুটা ধারণা দিতে চেষ্টা করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। উদাহরণ হিসাবে আল্লাহ্পাক সূরা ওয়াকিয়া ৭৯ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে :- “লা ইয়ামাস্সুহু ইল্লাল মুতাহ্হারুন”। অর্থ :- পবিত্রগণ ব্যতীত ইহাকে (অন্য কেহ) স্পর্শ করিতে পারে না”। কোরআন সম্পর্কে আল্লাহ্ প্রদত্ত্ব বাণী প্রকৃত পবিত্র এবং চলমান পবিত্রতার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান পরিলক্ষিত হয়। বিবেকের উপলব্ধিই প্রকৃত বিষয়ের দিকে অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে। আরও একটু উল্লেখ করতে চাই তা হলো সূরা নেছা-এর ১৫০ – ১৫১ (মিলিত) নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্পাক বলেন :- “আল্লাহ্ এবং রসূলের মধ্যে পৃথককারী পরিপূর্ণ কাফের”। এবং “একনিষ্ঠতার ঈমানকে দৃঢ় রক্ষাকারীকে শীঘ্রই সুসংবাদ প্রদান করার কথা উল্লেখ রয়েছে”।

তাহলে চলমান বাস্তবতার আঙ্গিকে মহান আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দেশনামা এবং চলমান ধর্মীয় পালনতব্য নিয়ম-নীতিগুলো জ্ঞানীদের জন্য উপস্থাপন হৃদয়ের অবাঞ্চিত কালিমাকে দূরে ঠেলে প্রকৃত আলোর উন্মেষ দ্বারা হৃদয় আলোকিত করানোর একটু ধারণা মাত্র। ইসলাম হইল ফিৎরাতী ধর্মীয় ব্যবস্থা যা প্রাকৃতিক বা আল্লাহ্র স্বভাব ধর্ম বলে বিবেচিত। শুধুমাত্র মানুষ এর ব্যতিক্রম (জ্বীন জাতির কথা এড়িয়ে গেলাম)। তাই মানুষ তার স্বভাবকে নিজ কর্ম প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফিৎরাতী অর্জন করতে পারলেই প্রকৃত ধর্মের স্বাদ এবং সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য স্বার্থকতা লাভ করে। আল্লাহ্পাক কোরআনুল মাজিদের সূরা রুম-এর ৩০ নাম্বার আয়াতে বলেন :- “ফাআকেম্ ওয়াজ্হাকা লীদ্দীনে হানীফান্”। অর্থাৎ “সুতরাং তুমি তোমার মুখমন্ডলকে একনিষ্ঠভাবে দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত কর”।

আধ্যাত্মিক হৃদয় বইটিতে ধর্মের প্রাথমিক ধাপগুলোকে চলমান ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করে আধ্যাত্মিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় চলমান প্রক্রিয়াতে কার্যকারিতা না থাকার কারণে মূল বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে এবং জ্ঞানীদের উপমাসহ কোরআন হাদিসের আঙ্গিকে উপস্থাপনের জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। যেন প্রকৃত বিষয় সম্পর্কে অনুধাবন করতে পাঠক বাবা-মায়েরা সচেষ্ট হয়। সমসাময়িক নীতি আর আনুষ্ঠানিক ধর্মের মধ্যে মানুষকে বেঁধে যান্ত্রিক মানুষে রূপান্তর মানবতা বিপন্ন সহ ধর্মের খোলসকে ছিন্ন করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি। এরই ধারাবাহিকতায় হয়ত অত্যাচার, জুলুম, নিপীড়ন, জ্বালা-যন্ত্রণা, পোহানোর অবস্থা তৈরী করতে পারে। এগুলো মুখ বুজে সহ্য করে হলেও কিছু মানুষের কাছে আমাদের উপস্থাপন প্রকৃত দিশা লাভে সচেষ্ট হলেই কেবল উক্ত পরিশ্রমের স্বার্থকতা পাবে।

বস্তুবাদের জঞ্জাল মানব মস্তিষ্কে এমন ভাবে চেপে বসেছে যা চলমান ব্যবস্থা থেকে মানব-মানবীকে উত্তরণ জরুরী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্পাক সূরা আর-রহ্মান-এর ৩৩ নাম্বার আয়াত বলেন :- “ইয়া মাশারাল জিন্নি ওয়াল্ ইন্সি ইনিস্ তাত্তাতুম আন্ তান্ফুজু মিন আখতারি সামাওয়াতি ওয়াল র্আদি ফান্ফুজ; লা তান্ফুজুনা ইল্লা বিসুলতান”। অর্থ :- “ওহে জ্বীন এবং মানুষের সম্প্রদায়, যদি তোমরা পার যে তোমরা বাহির হও আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর সীমা (হইতে), সুতরাং তোমরা বাহির হইয়া যাও। মহাশক্তির অনুমতি ছাড়া তোমরা বাহির হইতে পারিবে না”। অর্থাৎ মানব-মানবীকে প্রকৃত মুক্ততা অর্জন হওয়াই যে সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য ইহা আজকের জামানার মানুষ ভুলতে বসেছে। সৃষ্টি এবং স্রষ্টার দ্বৈত অস্তিত্বের মিথ্যা ধারণার মূল উৎস মানুষিক দ্বন্দ। তাই সকল দ্বন্দের অবসান কল্পে মানুষ আধ্যাত্মিকতার নীতি আদর্শগুলো হৃদয়ে ধারণ করে প্রকৃত ধর্মীয় প্রতিনিধি হিসাবে নিজেকে তৈরী করতে সচেষ্ট হবে, মহান আল্লাহর সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য সফল হবে। এজন্য যে বিষয়গুলো (ফেতনা) Confusion তৈরী করে, তার সঠিক ধারণা গুলো আলোচ্য বইটিতে সারমর্ম হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।যাহা পাঠক বাবা-মায়েদের প্রকৃত বিধানের দিকে অনুপ্রাণিত করতে সহায়তা করবে। অবশ্য গুরুবাদ ব্যতীত কোন কর্মই পরিপূর্ণতা দানে অক্ষম বৈকি! কোরআন সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা এবং মতকে আলোচ্য পুস্তকটিতে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। যাহা পাঠক বাবা-মায়েদেরকে একটি নতুন দিগন্তের দিশা দিতে চেষ্টা করবে। সকল মানব-মানবীকে প্রকৃত বিধান অনুসরণ করবার নিবেদন। ভুল ত্রুটি মার্জনীয় দৃষ্টিতে দেখবার আহ্বান রেখে সকল পাঠক বাবা-মায়েদের শুভেচ্ছাসহ মঙ্গল কামনায়,

বাবা দেলোয়ার জানুয়ারি, ২০২১ইং

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button